বাবা মারা যাওয়ায় মায়ের জন্য পাত্র চেয়ে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ অপূর্ব।
গত শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে জীবনসঙ্গী খুঁজে দেওয়ার ‘বিসিসিবি মেট্রিমনিয়াল: হেভেনলি ম্যাচ’ নামের ফেসবুক গ্রুপে মায়ের জন্য পাত্র চেয়ে পোস্ট করেন অপূর্ব। তিনি ‘জি অ্যান্ড টেক’ নামে একটি অনলাইন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এমডি।
অপূর্বর বড় ভাই ইমরান হোসেনও পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ইমরান বিয়ে করেছেন এবং তার পাঁচ বছরের একটি সন্তানও আছে।
জানা যায়, ইমরান-অপূর্বর বাবা ঈয়াদ আলী ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগে ভুগে বছর দুয়েক আগে মারা যান। দুই ভাই নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বলে মাকে সেভাবে সময় দিতে পারেন না। তাই মায়ের একাকিত্ব দূর করতে তার জন্য পাত্র চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন তার ছেলে।
মাকে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন অপূর্ব। মায়ের সঙ্গে তোলা একটি ছবি পোস্ট করে অপূর্ব লিখেছেন, ‘বাবা মারা গেছে, তাই আম্মুর জন্য পাত্র খুঁজছি।’
মায়ের জন্য কেমন পাত্র চান, সেটাও পোস্টে জানিয়েছেন অপূর্ব। তিনি লিখেছেন, ‘পাত্র ঢাকার আশপাশের বাসিন্দা হলে ভালো। ব্যবসায়ী বা জব হোল্ডার, শিক্ষাগত যোগ্যতা কম হলেও সমস্যা নেই। নামাজি হতে হবে। মানে একদম সাদামাটা একজন যে আম্মুর জীবনের বাকি চলার পথগুলোর সঙ্গী হবেন। বয়স ৪২-৫০ বছর হলে ভালো হয়।’
পাত্রী অর্থাৎ মায়ের সম্পর্কে অপূর্ব জানান, ‘পাত্রীর নাম ডলি আক্তার। ২ ছেলে রয়েছে, বড় ছেলের পেশা ব্যবসা এবং ছোট ছেলের পেশা অনলাইনে ব্যবসা। পাত্রীর বয়স ৪২ বছর। পড়াশোনা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। স্থায়ী ঠিকানা: কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা। পারিবারিকভাবেই বিয়ে দিতে ইচ্ছুক।’
মায়ের জন্য পাত্র চেয়ে অপূর্বর এমন ব্যতিক্রমী বিজ্ঞাপন ঘিরে ইতোমধ্যেই ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞাপনটি পোস্ট করার পর থেকেই প্রশংসায় ভাসছেন অপূর্ব। তার সেই বিজ্ঞাপনে ৬ শতাধিক মন্তব্য করেছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। এর প্রায় সবই প্রশংসাসূচক। মায়ের এমন সন্তানকে এবং তার মানসিকতাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন তারা।
অপূর্বর উদ্যোগকে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের বড় পদক্ষেপ বলেও মনে করছেন কেউ কেউ। মোহনা আফরোজ নামে একজন তার পোস্টে লিখেছেন, ‘কী দারুণ প্রগতিশীল মানসিকতার সন্তান তিনি গড়ে তুলেছেন, অভিবাদন!’
অনেকে ডলি আক্তারের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন। লাম মীম আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, ‘এটা খুব অনুপ্রেরণামূলক। আশাকরি, আপনার মা তার জন্য যোগ্য একজন জীবনসঙ্গী পাবেন।’